মাটি থেকে প্রায় ৫০০০ ফুট বা দেড় হাজার মিটারের চেয়ে কিছুটা বেশি (১৫২০মি.) উচ্চতায় উড়ছে দুই আসন বিশিষ্ট বিমানটি। তবে এটি সাধারণ বিমানের মতো অকটেন কিংবা জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে চলেনা, বরং নবায়নযোগ্য জ্বালানী অর্থাৎ বিমানের ডানায় থাকা সৌরকোষের মাধ্যমে সূর্যের আলো কে সংরক্ষণ করার মাধ্যমে চলার শক্তি পেয়ে থাকে বিমানটি।
দুই আসন বিশিষ্ট প্রোটোটাইপ বিমানটির টেস্ট ফ্লাইট ছিলো আগস্টের ২৫ তারিখে। আর এই টেস্ট ফ্লাইটেই বিমানটির ককপিট থেকে প্যারাস্যুট এর মাধ্যমে লাফ দিয়ে ইতিহাস গড়লেন সুইজারল্যান্ডের রাফায়েল ডোমজান! তিনিই বিশ্বের ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে, সৌর জ্বালানী চালিত বিমান থেকে লাফ দেয়ার মাধ্যমে নাম লেখালেন।
ইলেক্ট্রিক-সোলার চালিত বিমান থেকে তাঁর এই অভিনব পন্থায় লাফ দেয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিলো নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে সবার মাঝে তুলে ধরা। রাফায়েল ডোমজান ‘সোলার স্ট্রাটস‘ প্রকল্পের প্রধান ও প্যারাশ্যুটিস্ট। তাই নিজেই আকাশ থেকে প্রথম শূন্যে ভাসলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বে এখন প্রথমের ছড়াছড়ি। সবাই চায় ইতিহাসের পাতায় তাঁর নামটি লিখা থাক। তবে এ ক্ষেত্রে সবচাইতে অবাক বিষয় হলো কেউ একজন সর্বপ্রথম ইলেট্রিক বিমান থেকে লাফ দিলো। এবং সেটি আমিই!
এবং এই লাফ দেয়াটি স্কাই ডাইভিং এর জগতে একটি বড় পরিবর্তন আনবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।
শূন্যে ভাসার আগে ইলেক্ট্রিক বিমান থেকে লাফ দেয়া এবং এর পরবর্তী বিভিন্ন বিষয় অজানা ছিলো রাফায়েল এর, বিশেষ করে ডাইভ দেয়ার সময় বিমানের পাখায় দাঁড়ালে সেটির কি অবস্থা হবে তা সম্পর্কে তিনি সম্পূর্ণরূপে ধোঁয়াশায় ছিলেন।
প্রায় দেড় হাজার মিটার উঁচু থেকে কোন ধাক্কা এড়িয়ে লাফ দেয়াটাও বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিলো বলে জানান রাফায়েল। সোলার বিমানের প্রসারের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ্বালানির উপর নির্ভরশীলতা তৈরী করতে চান তাঁরা। ২০২২ সাল নাগাদ ২০,০০০ মিটার উচ্চতায় উড়তে সক্ষম এমন ক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ বিমান নিয়ে কাজ করার কথা জানান তাঁরা।
উল্লেখ্য, এর আগেও সৌর শক্তি চালিত বিমান সোলার ইমপালস টু উড়োজাহাজ নিয়ে নিউইয়র্ক থেকে উড্ডয়ন করে অ্যাটলান্টিক পাড়ি দিয়ে বিশ্ব পরিভ্রমণের যাত্রা শুরু করেন পিকার্ড নামক একজন মনোরোগ চিকিৎসক। সেই যাত্রায় তিনি সহ তাঁর সহোযোগী সুইস পাইলট আন্দ্রে বোর্শবার্গের সাথে ভাগাভাগি করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ঘুরে সোলার চালিত বিমানের মাধ্যমে যাতায়াত ব্যাবস্থা উন্নতির ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রদান করেন।
এ এন এম নাঈম/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ ন্যাশনাল জিওগ্রাফি, নিউ ইয়র্ক পোস্ট, এ বি সি নিউজ