এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ছড়ালেও দূষিত পানির মাধ্যমেও করোনা ছড়ার আশংকা দেখছেন বিজ্ঞানীরা। নতুন গবেষনায় দেখা যাচ্ছে, করোনা রোগী এবং সুস্থ ব্যক্তি উভয়ের মলে করোনা ভাইরাস পাওয়া গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা আশংকা করছেন ভাইরাসটি পানির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মহামারী আরো বিপজ্জনক হবে।
Wastewater-based Epidemiology বা দূষিত পানির মাধ্যমে রোগবিস্তারবিদ্যা পদ্ধতির দ্বারা সহজেই পানির মধ্যে ভাইরাস নির্নয় করা সম্ভব। এটি সাধারণত কোনো সংক্রমনশীল রোগের বিরুদ্ধে আগাম সতর্ক বার্তা হিসেবে ভূমিকা পালন করে এবং ভবিষ্যতে নতুনভাবে পানির মাধ্যমে করোনার সংক্রমন হতে শুরু করলে তা নিয়ে আগেই সতর্ক হতে সহায়তা করবে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে ২০১৩-১৪ সালে পোলিওর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছিল ইসরায়েল। মূলত পোলিওর সংক্রমণ হওয়ার পূর্বেই সবাইকে টীকা প্রদান বা ভ্যাক্সিনেশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিল দেশটি।
সম্প্রতি নেদারল্যান্ডস, আরব আমিরাত, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ায় করোনা প্রতিরোধে এই পদ্ধতিটি গ্রহণ করেছে এবং বেশ ভাল ফল পেয়েছে।
সাউথ কুইন্সল্যান্ডে এই পদ্ধতি ব্যবহার করে প্রথমবারের মত করোনা নির্নয় করে অস্ট্রেলিয়া। দূষিত পানি থেকে প্রাপ্ত নমুনা সংগ্রহের পর সেখান থেকে RNA কে আলাদা করা হয় এবং সেটিকে Real-Time PCR (qPCR) এর মধ্যে চালনা করা। দূষিত পানির মধ্যে প্রচুর জটিলতা থাকার কারনে ভাইরাস নির্নয় করতে একমাত্র রিয়েল টাইম পিসিআরকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়৷ Sanger Sequencing পরিচালনা করে তার সাথে Applied Biosystem Genetic Analysizer যুক্ত করার মাধ্যমেই করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রেও একই পদ্ধতিতে Sanger Sequencing মাধ্যমে করোনা নির্নয় করা হয় এবং qPCR এর মাধ্যমে করোনার উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। মূলত এই পদ্ধতিটিই এখন পর্যন্ত স্বীকৃত। এই পদ্ধতি থেকে প্রাপ্ত তথ্যগুলো ব্যবহার করে করোনার প্রভাব ও বিস্তার সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব, যা করোনা সম্পর্কে সচেতনতায় মানুষকে সাহায্য করবে।
ইকবাল হোসেন নাফিজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক