হ্রদের পানির সম্পূর্ণ গোলাপি রং ধারণ করা অবাক করবে যে কাউকেই! নামটি দেখেই ভ্রমণপিয়াসুদের মনে এই হ্রদ টি ঘুরে দেখার চিন্তা একবার হলেও জাগতেই পারে! আপাতদৃষ্টিতে সবার কাছে দেখতে ভালো লাগলেও এটি হ্রদের আসল রূপ নয়। অনন্য হ্রদের মতোই স্বাভাবিক ছিলো প্যারাগুয়ের লিম্বিও শহরের এই হ্রদের পানি।
চলমান লকডাউনের মাঝেই কয়েকমাস আগে শুরু হয় এই হ্রদের রং পাল্টানো। এখন পর্যন্ত ধারণা করা হচ্ছে মূলত দূষণের কারণেই এমন রূপ ধারণ করেছে হ্রদের পানি। স্থানীয়দের অভিযোগ, পাশের একটি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য হ্রদটির পানিতে মিশে গিয়ে দূষণ ঘটেছে। এরিমধ্যে দূষণের কারণে হ্রদের আশেপাশের জীববৈচিত্র্যে পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে মারা যাচ্ছে হ্রদের মাছ এবং আশেপাশে বসবাসকারী পাখিও। এরই প্রতিবাদে আন্দোলন করছেন হ্রদের আশেপাশে বসবাসকারী স্থানীয়রা।
প্যারাগুয়ের একটি গবেষণা সংস্থা হ্রদের পানি পরীক্ষা করে জানিয়েছে, হ্রদের পানিতে ক্রোমিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিক বেশী, যা মূলত হ্রদের আশেপাশের চামড়া প্রক্রিয়াকারী কারখানা গুলো থেকে বর্জ্য হিসেবে হ্রদের পানিতে গিয়ে মিশছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অবস্থা আরো খারাপ হওয়ার আশংকা করছে পরিবেশবিদরা।
তবে দূষণ ছাড়াও হ্রদ এর পানিতে প্রাকৃতিক পরিবর্তনগত কোনো কারণে রং বদলাচ্ছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন একদল বিজ্ঞানী। অনেকসময় হ্রদের বদ্ধ পানিতে লবণের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়ায় এমন রং বদলে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটে। লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন হ্রদের মধ্যে বোট চলাচল বা হ্রদের পাড়ে মানুষের পদচারণা না থাকায় প্যারাগুয়ের এই হ্রদটিতে বিটা ক্যারোটিন নিঃসরণকারী একধরণের শৈবালের অস্তিত্বের বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীরা। কারণ বিটা ক্যারোটিন নামের প্রাকৃতিক এই রঞ্জক পানিতে যোগ হওয়া মাত্রই পানির রং বদলে গোলাপি হয়ে যায়।
সম্প্রতি, লকডাউনেই মহারাষ্ট্রের বুলধানা জেলার ৭৭.৬৯ হেক্টরের বিশাল হ্রদটিও প্যারাগুয়ের লিম্বিও শহরের হ্রদের মতোই গোলাপি রঙ ধারণ করেছে। মুম্বাই থেকে ৫০০ কিলোমিটার দূরের এই হ্রদের রঙ পাল্টানো কারণ সম্পর্কে জৈব দূষণকে দায়ী করা হলেও, পরবর্তীতে বিজ্ঞানীরা হ্রদের পানি পরীক্ষা করে এতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিমাত্রায় লবণের উপস্থিতির প্রমান পেয়েছেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে পদচারণা না থাকায় ৫০ হাজার বছর আগে সৃষ্ট হ্রদটির পানি গোলাপি রঙ ধারণ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ. এন. এম. নাঈম/ নিজস্ব প্রতিবেদক
+1
+1
+1
+1
2
+1
+1
+1