টিকটক কি ফেসবুকের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে?
বেশ কিছুদিন ধরে টিকটক প্রচুর টাকা আয় করছে। আর মার্ক জাকারবার্গ এটিকে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখা শুরু করেছেন। রয়টার্স এর তথ্যমতে, টিকটক এর ডেভেলপার কোম্পানি ByteDance বছরের প্রথম অর্ধেকে প্রায় ৭ বিলিয়ন হতে ৮.৪ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে।
এমন একটা সময় যখন WeWork, Uber, Lyft এর মতো কোম্পানিগুলোর ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে সেখানে মাত্র কয়েক বছর বয়সী টেক কোম্পানি হিসেবে টিকটক বেশ ভাল করেছে। মার্ক জাকারবার্গও এটা নিয়ে ভাবছেন। ফেসবুক মিটিংএর একটি লিকড্ রেকর্ডিং এ তাকে এটি নিয়ে কথা বলতে শোনা যায়। ( পুরো রেকর্ডিংটি- https://www.theverge.com/2019/10/1/20892354/mark-zuckerberg-full-transcript-leaked-facebook-meetings)
মার্ক জাকারবার্গ মনে করছেন, টিকটক আমেরিকা আর ইন্ডিয়ায় প্রচুর জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তরুণ-তরুণীরাই টিকটক সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছে।
মার্কের মতে, ইন্ডিয়াতে টিকটক এর ব্যবহার ইনস্টাগ্রামকে ছাড়িয়ে গিয়েছে। তিনি মেক্সিকোতে টিকটক এর মতো একটি মিডিয়া খোলার পরিকল্পনা করছেন।
উঠতি বয়সীদের মধ্যে টিকটক আসলে কতোটা জনপ্রিয়? বিবিসি নিউজ এর Tech Correspondent Rory Cellan-Jones সাউথ ওয়েলস্ স্কুলে শিক্ষার্থীদের সাথে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া হেবিট নিয়ে কথা বলেন। সেখানে দেখা যায়, ছাত্রছাত্রীদের ফেসবুক ব্যবহারের প্রবণতা কমলেও তারা ইনস্টাগ্রাম আর স্ন্যাপচ্যাটে বেশ সক্রিয়।
পাশাপাশি টিকটক ব্যবহারের ব্যাপারেও তাদের বেশ ভালো সাড়া পাওয়া যায় যেখানে মাত্র কয়েক মাস আগেও তাদের এমন প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের ডাউনলোড এবং পারফরম্যান্স মনিটর করা কোম্পানি App Annie এর রিপোর্টেও টিকটক এর জনপ্রিয়তা লক্ষ করা যায়। আগস্টে অ্যান্ড্রয়েড ইউজাররা সর্বমোট ১.১ বিলিয়ন ঘণ্টা টিকটক চালিয়েছে, যা আগের বছরের থেকে প্রায় ৪০০% বেশি।
কিন্তু বেশি জনপ্রিয়তার সাথে নিরাপত্তার প্রশ্নটিও চলে আসে। একটি ইনভেস্টিগেশনে দেখা যায় টিকটক বাচ্চাদের কাছে আপত্তিকর ম্যাসেজ পাঠানো অ্যাকাউন্টগুলো বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছে। টিকটক বলছে তারা এসব নিয়ে কাজ করছে।
আবার গার্ডিয়ান থেকে বের হওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী টিকটক একটি পুরোপুরি চাইনিজ কোম্পানি হওয়ায় তাদের বিভিন্ন সংবেদনশীল ইস্যুতে করা ভিডিও ডিলিট করে দিতে হয়।
তবে ইউরোপ, আমেরিকার টিনএজাররা এসব নিয়ে তেমন চিন্তিত নয়। তারা টিকটককে বলেছে, “fun”, “catchy”, “funny”, “trendy”। কিন্তু ফেসবুক বা ইন্সটাগ্রাম নিয়ে তাদের মনোভাব একই থাকছে না, যেটা জাকারবার্গের জন্যে যথেষ্ট চিন্তার কারণ হতে পারে।
সূত্র: বিবিসি নিউজ