প্রযুক্তির সাথে সাথে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। সেই সাথে সহজ হয়ে যাচ্ছে আমাদের দৈনন্দিন সব কাজকর্ম। কয়েকদশক আগেও যখন কোন ছবি মুক্তি দেওয়া হতো, চিত্রশিল্পীদের সেটি রংতুলির সাহায্য ফুটিয়ে তুলতে হতো ব্যানারে। কিংবা প্রয়োজনীয় নোটস আর শিটস এখনকার মতো এক স্পর্শেই পাঠানো ছিলো কল্পনাতীত। কিন্তু দীর্ঘ সময় পাড়ি দিয়ে আজ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে হার্ডওয়্যারে যেমন পরিবর্তন এসেছে ঠিক তেমনই আমাদের জীবনকে মসৃণ করেছে প্লে স্টোর/অ্যাপ স্টোরে থাকা লক্ষাধিক অ্যাপস।
প্রযুক্তি দুনিয়ায় দা বিগ জায়ান্টটেক গুগল সাধারণত সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেই কাজ করে থাকে। যেই প্রতিষ্ঠান ছাড়া হয়তো থেমে যাবে আমাদের দৈনন্দিন কাজকর্ম সেই গুগল কিন্তু সার্চিং সার্ভিসেই থেমে নেই। তাদের রয়েছে অ্যাপ ডেভলপমেন্ট ইন্ড্রাস্টি এবং হার্ডওয়্যার রিসার্চ এন্ড ডেভেলপমেন্ট সেকশন, যার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমরা পেয়ে যাচ্ছি নিত্য নতুন প্রযুক্তির চমক। আজ কথা হবে গুগলের তৈরি তেমনই কিছু অ্যাপস নিয়ে।
এ্যালো (Allo)
এটি গুগলের চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন। অন্যান্য চ্যাট অ্যাপ্লিকেশনের মত আপনি এটি ব্যবহার করে চ্যাট করতে পারবেন, ছবি শেয়ার করতে পারবেন, কল করতে পারবেন। কিন্তু অন্য চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন থেকে এর পার্থক্য হল এখানে আপনি চাইলে আপনার বন্ধুদের গ্রুপ চ্যাটে “চিৎকার করা” বা কানে কানে কথা বলার মত “ফিসফিস করে” কথা বলার মত মজার মজার কিছু সেবা পাবেন। যা আপনাকে চ্যাট করার পাশাপাশি সামনাসামনি আড্ডা দেওয়ার মত একটা অভিজ্ঞতা দিবে।
জিমেইলিফাই (Gmailify)
এই এপ্লিকেশনটির মাধ্যমে আপনারে Gmail এ একাউন্ট না থাকার পরও আপনি Gmail এর সকল সুযোগ সুবিধা পেতে পারেন। একই সাথে আপনি আপনার সকল ই-মেইল একাউন্ট যেমন Yahoo, Outlook কিংবা Allo এর সকল ম্যাসেজ একটি মাত্র ইনবক্সে একসাথে পাবেন। বার বার আপনাকে আলাদা আলাদা একাউন্ট চেক করতে হবে না।
গুগল ফন্টস (Google Fonts)
এই অ্যাপ্লিকেশনটি আপনাকে আপনার ওয়েব প্রজেক্টের এর জন্য সবচেয়ে সেরা ফন্ট গুলো খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। এই অ্যাপ্লিকেশনটিতে আপনি অসংখ্য নান্দনিক ফন্ট- এর পাশাপাশি খুঁজে পাবেন অনেক ধরনের ডিজাইনার ফন্ট। যা আপনার গ্রাফিক ডিজাইন সহ বিভিন্ন ধরনের ডিজাইনের কাজে আপনাকে সাহায্য করবে।
প্যানোরামিও (Panoramio)
এটি একটি গুগল কমিউনিটি অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশনটির মাধ্যমে আপনি আপনার ছবি সহজেই পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে থাকা মানুষের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানের বিশেষ জিনিসের বর্ণনাও এই সেবাটিতে ছিলো। কিন্ত গুগল ম্যাপস সেবা আসার পরবর্তী সময়ে গুগল এই সেবাটি বন্ধ ঘোষণা করে।
গুগল স্ক্রিন সার্চ (Google Screen Search)
এটি আপনার স্ক্রিনে থাকা যেকোনো তথ্য বা ছবি স্ক্যান করে সে বিষয়বস্তু সম্পর্কে আরো নানান তথ্য আপনার কাছে প্রকাশ করবে। যেমন- রিসার্চ, বিভিন্ন বিজ্ঞান ভিত্তিক আর্টিকেল ইত্যাদি।
গুগল ক্লাসরুম (Google Class Room)
বর্তমানে মিটিং কিংবা অনলাইন ক্লাস এর সামগ্রিক ব্যবস্থা কে আরো গতিশীল করতে এসেছে গুগল ক্লাসরুম। এর মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন স্থানে অবস্থানকারী শিক্ষার্থী কিংবা অফিস ক্লায়েন্টরা একত্রে বসে মিটিং করতে পারেন। সাধারণত কোনো একজন ইউজার এর মাধ্যমে মিটিং টি শুরু হয় যাকে হোস্ট বলা হয়। পরবর্তীতে তিনি একটি লিংক মিটিংএ অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রেরণ করেন। যেটি ব্যবহার করে তারা সেই মিটিং এ যুক্ত হতে পারেন।
গুগল সাউন্ড সার্চ (Google Sound Search)
হঠাৎ কোথাও কোন পছন্দের গান শুনলেন বা কোনো গান বেশ পছন্দ হলো, কিন্তু তার নাম সঠিক জানা নেই বা মনে পড়ছে না। সেই ক্ষেত্রে এই অ্যাপটি অন্যতম। কারণ এর সাহায্যে যেকোনো জায়গায় যখন যেই গান বাজবে সেই গানেরই নাম দেখাবে আপনার ডিভাইসে।
থিংক উইথ গুগল (Think with Google)
এটি প্রধানত মার্কেটারদের জন্য তৈরীকৃত একটি অ্যাপ। এর মাধ্যমে মার্কেটারদের নিত্যনতুন যাবতীয় সকল তথ্য পাওয়া যায়।
গুগল স্কাই (Google Sky)
গুগল স্কাই এর মাধ্যমে পৃথিবীর বাইরের জগৎটাকে দেখার সুযোগ হয়ে উঠেছে। এর মাধ্যমে নতুন নতুন এ্যস্ট্রোলজি সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য জানা যায়। এর সাহায্যে স্মার্ট ফোনে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি অনুভব করার মতোও ব্যাপার গুলোও সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
এছাড়াও রয়েছে গুগল ট্রান্সলেটর, গুগল আর্থ, গুগল ম্যাপস, গুগল আর্ট বা গুগল হ্যাংআউট এর মত অনেক সাহায্যকারী অ্যাপ্লিকেশন, যেগুলো আপনার স্মার্টফোনের ব্যবহারকে করবে আরো সহজ এবং সুবিধাজনক। তাই দেরি না করে এখনি ডাউনলোড করে ফেলুন আপনার পছন্দের অ্যাপ্লিকেশনটি।
এ এন এম নাইম/ নিজস্ব প্রতিবেদক
সূত্রঃ
২.https://support.google.com/
৩.https://classroom.google.
৬.https://www.thinkwithgoogle.
৭.https://en.m.wikipedia.org/