ক্যান্সার কী?
আধুনিক বিজ্ঞানের অগ্রগতির পরেও ক্যান্সার এখনো যেন এক বিভীষিকাই রয়ে গেছে। এদের ভেতর প্যানক্রিয়াটিক বা অগ্ন্যাশয়ে ক্যান্সার তো আরো ভয়াবহ। প্রথম দিকেই এ ক্যান্সার শনাক্ত করা শক্ত, আর পরেও যদিওবা ধরা পড়ে, ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। তখন চিকিৎসা করেও সাফল্যের সম্ভাবনা মাত্র তিন শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু আশার কথা এই যে, সে সমীকরণে শীঘ্রই আসছে পরিবর্তন।
বর্তমানে ক্যান্সার শনাক্তে চিকিৎসকেরা সিটি স্ক্যান, আলট্রাসাউন্ড, এমআরআইসহ বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু নতুন এই প্রযুক্তি রক্তে অণু পরিমান ক্যান্সারের কোষ থাকলেও তা ধরতে সক্ষম। প্রযুক্তিটি সফল হলে বাজারে এ প্রযুক্তির মূল্য হবে আনুমানিক ৬০ কোটি ডলার।
বর্তমানে রক্তের মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় করতে একটিমাত্র কোম্পানি সফল হয়েছে যা যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াতে অবস্থিত এবং গ্যালারী (Galleri) নামে পরিচিত। কোম্পানিটির দাবি, তারা রক্তের একটি নমুনা থেকে প্রায় ৫০ ধরনের ক্যান্সার শনাক্ত করতে সক্ষম।
এ গবেষণার মূল লক্ষ্য আগে থেকেই ক্যান্সার সনাক্ত করে রোগীদের মৃত্যুহার কমানো; বিশেষ করে অগ্ন্যাশয় ক্যান্সারের মতো ক্যান্সারের ক্ষেত্রে, যেগুলো সহজে শনাক্ত করা যায় না।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বছরে আনুমানিক ৬ লাখ মানুষের ক্যান্সারে মৃত্যু হয়; যার এক-তৃতীয়াংশই ভালো পরীক্ষার অভাবের কারণে ক্যান্সার ধরা পড়তে দেরি হওয়ায় শেষদিকে চিকিৎসকদের আর কিছু করার থাকে না।
ডাক্তাররা ইতোমধ্যেই এই লিকুইড বায়োপসি ব্যবহার করা শুরু করে দিয়েছেন; এর সাহায্যে বর্তমানে সুস্থ্য রোগীর দেহে পুনরায় ক্যান্সারের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কিনা তাও বোঝার চেষ্টা চলছে।
এছাড়াও এই পদ্ধতিতে কিছু অসুবিধা রয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল কোন কারনে ভুল হলে রোগীদের ক্যান্সারের প্রভাব কমানোর জন্য বিভিন্ন অপ্রয়োজনীয় চিকিৎসার মধ্য দিয়ে যেতে হয়; যা প্রায়ই শরীরের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
সুতরাং এ পরীক্ষাগুলো একইসাথে কার্যকরী এবং নিখুঁত হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; কাজটি কঠিন হলেও বর্তমানে গবেষকেরা এই পরীক্ষাটিকে ক্রমাগত উন্নতি করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে করে নিখুঁতভাবে তারা ক্যান্সার সনাক্ত ও চিকিৎসা সম্পন্ন করতে পারে।
হাসিনাত রিফা / নিজস্ব প্রতিবেদক