বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ থেকে বাঁচতে কিছু সাধারণ নির্দেশনা হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বাইরে গেলে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস ব্যবহার করা, বারবার হাত ধোয়া, মুখের কাছে হাত না নেয়া ইত্যাদি।
তবে এসব কার্যক্রম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার আগ পর্যন্তই কার্যকরী। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেলে এসব আর কোন কাজে দিবে না বরং যা কাজে দিবে তা হলো আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা। কারন কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে ও মারা যাচ্ছে তারাই যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম।
এদিকে কোনো ভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না করোনা সংক্রমন। যে কেউ যেকোনো সময়ে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হতে পারে। তাই আগে থেকেই শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
৫টি অতি সাধারণ উপায়ে আমরা আমাদের শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা চাইলেই বৃদ্ধি করতে পারি।
১। খাবারের প্রতি যত্নশীল হোনঃ
আমাদের স্বাস্থ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে আমাদের খাদ্যাভ্যাস। সবুজ শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন থাকে বিশেষ করে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-ডি। তাছাড়াও নানারকম ফল এ থাকে ভিটামিন-সি যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখে। এছাড়াও পরিমিত পরিমানে মাছ-মাংস আমাদের শরীরে প্রোটিন বা আমিষের যোগান দিবে।
কোভিড-১৯ এ সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আছেন উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়বেটিস এর রোগীরা। তাদের জন্যেও রয়েছে একই ধরনের নির্দেশনা।
২। পরিমিত পরিমানে পানি পান করুনঃ
প্রতিদিন ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। আমাদের শরীরের রক্ত বিশুদ্ধকরণে পানির কোন বিকল্প নেই। এছাড়া কমলা, লেবু ও অন্যান্য ভিটামিন-সি সমৃদ্ধ ফলের রস ও ডাবের পানি পান করতে পারেন।
৩। ঘুমের সাথে আপোস নয়ঃ
ঘুমের অভাব এই করোনাক্রান্তিতে অভিশাপ হতে পারে। নিয়মিত ঘুম আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়। তাছাড়া যারা ব্যায়াম করেন তাদের পর্যাপ্ত ঘুমের কোন বিকল্প নেই। প্রাপ্তবয়স্কদের নিম্নে ৬ ঘন্টা ঘুমানো উচিৎ তবে উত্তম হচ্ছে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমানো।
৪। নিয়মিত ব্যায়াম করুনঃ
প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট ব্যায়াম করুন, তাতে খাবার ভালো হজম হয় এবং ক্ষুধা বাড়ে। তাছাড়াও নিয়মিত ব্যায়াম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। যারা বেশিক্ষন ব্যায়াম করতে পারেন না তারা হালকা পরিসরে হলেও অল্প কিছুক্ষন হাত পা নাড়াতে পারেন। যোগ ব্যয়াম বা ধ্যান ও হতে পারে ব্যয়ামের অংশ। সামান্য হলেও এসব ব্যয়াম আমাদেরকে শারীরিক ও মানসিক শক্তি যোগান দিবে।
৫। রোদে বাহিরে হাঁটা-হাঁটি করুনঃ
সূর্যের সংস্পর্শে গেলে আমাদের চামড়ায় ভিটামিন-ডি উৎপন্ন হয়। এছাড়াও অনেক ধরনের ফ্লু ভাইরাস এই সূর্যালোকে এসে ধ্বংস হয়ে যায়। তাই লকডাউনের এই পরিস্থিতিতেও সম্ভব হলে সকাল ৯ টার আগে এবং বিকাল ৩ টার পর রোদে বাহিরে বেরোতে পারেন।
মানবসৃস্টির পর থেকেই আমরা নানা অসুখ-বিসুখ এর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছি। তবে এর সবচেয়ে সুন্দর দিকটি হলো এই লড়াই এর প্রাথমিক অস্ত্র গুলো প্রকৃতিতেই রয়েছে। আমাদের শুধু দরকার সেসব প্রাকৃতিক অস্ত্র ব্যবহার করে একটি সুস্থ ও সুন্দর জীবন-যাপন করা।
আকিল রহমান/ নিজস্ব প্রতিবেদক