যতদিনে চীনের উহান শহরে করোনা ভাইরাসের প্রথম ধরা পড়ে ততদিনে এই ভাইরাসটি অন্তত ১০০ টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। চীন ভাইরাসটি সাথে মোকাবেলা করার জন্য তাদের শক্তিশালী প্রযুক্তি খাত ও বিশেষত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এআই ডাটা সায়েন্স এবং প্রযুক্তির উপর ঝুঁকে পড়েছিল এবং বড় বড় প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্য সেবা দানে উদ্যোগ গ্রহণ করে ।
টেক স্টার্টআপ গুলো বিশ্বব্যাপী ক্লিনিশিয়ান ,শিক্ষাবিদ এবং সরকারের সাথে একত্রে যুক্ত হয় যাতে ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া মোকাবেলা করা যায়।
করোনা মোকাবেলা এবং লড়াইয়ের জন্য ১০ টি উপায়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছেঃ-
১. এআই (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি ব্যবহারে পূর্বাভাস:
যত বেশি আমরা ভাইরাসকে সনাক্ত করতে পারব তত বেশি আমরা ভাইরাসকে প্রতিহত করতে পারবো। নিউজ রিপোর্ট, সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম এবং সরকারি তথ্য বিশ্লেষণ করে এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শনাক্ত করতে পারে AI এবং এর মাধ্যমে সংক্রামক রোগের ঝুঁকির সন্ধান করা হয়। এতে দেখা যাচ্ছে যে রোগ নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিরোধ কেন্দ্র বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের জনসাধারণ সর্তকতা জারি করার পূর্বেই AI এ সম্পর্কে সতর্ক করে।
২. ভাইরাস শনাক্তে এআই:
কৃত্রিম গোয়েন্দা সংস্থা একটি AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) ব্যবস্থা করে যা কিনা ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যসেবার কর্মীদের করোনা ভাইরাসকে দক্ষতার সাথে শনাক্ত
ও নিরীক্ষণ করতে সহায়তা করে। চাইনিজ ই-কমার্স এর একটি প্রতিষ্ঠানে আলিবাবা একটি AI চালিত ডায়াগনোসিস সিস্টেম তৈরি করে যা সেকেন্ডের মধ্যে প্রায় 96 ভাগ সঠিক তথ্য দেয় ভাইরাসের উপস্থিতির ব্যাপারে।
৩. স্বাস্থ্যসেবা :
এক্ষেত্রে ব্লকচেইন প্লাটফর্ম প্রস্তাবিত করা হয় ant financial এর দ্বারা যা রোগীদের এবং হাসপাতালের কর্মীদের মুখোমুখি হওয়া কমিয়ে আনে।
![]() |
৪. ড্রোনের দ্বারা চিকিৎসা সরবরাহ:
ড্রোনের ব্যবহার একটি নিরাপদ অন্যতম উপায় যার মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ, চিকিৎসা সরবরাহ করা ইত্যাদি কাজ করা যায়। তাছাড়া ড্রোন শহরের রোগ নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র ও হাসপাতালে মধ্যে ন্যূনতম দূরত্বে কম ঝুঁকিতে চিকিৎসার নমুনা ও পৃথক পৃথক পদার্থ পরিবহন করছে। ড্রোনগুলো পাবলিক স্পেস গুলিতে টহল দেওয়ার জন্য, লোকসমাগম কমাবার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
৫. রোবটের ব্যবহার:
রোবট ভাইরাসের প্রতি সংবেদনশীল নয় তাই মানবিক যোগাযোগের পরিমাণ হ্রাস করার জন্য রোবট পরিষ্কার মূলক কাজ, জীবাণুমুক্ত করা ,খাবার সরবরাহ ,ওষুধ সরবরাহ করার মতো কাজ সম্পন্ন করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে। ব্লু ওশান রোবটিক্সের ইউভিডি রোবটগুলো ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসগুলোকে অতিবেগুনি আলো ব্যবহার করে ধ্বংস করছে। চীনের প্রায় চল্লিশটির ও বেশি হাসপাতালে ক্যাটারিং এর জন্য রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।
৬. ঔষধ এর উন্নয়নে:
গুগোল ডিপমাইন্ড বিভাগ তার সর্বশেষ AI আলগরিদম ও কম্পিউটার শক্তি ব্যবহার করে ভাইরাস যে সকল প্রোটিন এর সমন্বয়ে গঠিত তা শনাক্ত করতে কাজ করছে। Benavolent AI এই পদ্ধতিতে ওষুধ তৈরি করে যা বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং তারা বর্তমানে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে ওষুধ আবিষ্কারের জন্য কাজ করছে। আর এই প্রথমবার সংস্থাটি সংক্রামক রোগের ঔষধ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।
৭. উন্নত কাপড় সুরক্ষা প্রস্তাব:
ইসরাইলি স্টার্টআপ সোফিয়ার মত সংস্থাগুলো স্বাস্থ্য সেবা দানে অ্যান্টি প্যাথোজেন, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ফেব্রিক ব্যবহার করতে চাচ্ছে যা মেটা অক্সাইড ন্যানো পার্টিকেল এর উপর নির্ভর করে।
৮. সংক্রমিত ব্যক্তি শনাক্তকরণে:
চায়নায় ফেইস রিকগনিশন এর মাধ্যমে ব্যক্তির অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা শনাক্ত করা হচ্ছে। যাতে অতিরিক্ত তাপমাত্রার ব্যক্তিকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করে ভাইরাসের উপস্থিতি পরীক্ষা করা যায়। আবার এক বিশেষ হেলমেট আছে যা পরিধান করলে সামনে থাকা ব্যক্তির দেহের তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
৯. চ্যাটবট এর মাধ্যমে তথ্য প্রদান:
WeChat এর মাধ্যমে চায়না মানুষ চাইলে ফ্রি অনলাইন স্বাস্থ্য সেবা নিতে পারে।
১০. সুপার কম্পিউটারের ব্যবহার :
করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরিতে সুপার কম্পিউটার ব্যবহার করা হচ্ছে। টেক সম্পর্কিত কোম্পানি গুলো যেমন tencent, Didi, Huawei এর সুপার কম্পিউটার গুলো ব্যবহৃত হচ্ছে গবেষকদের দ্বারা যারা করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরীর পরিকল্পনা করছে।সাধারণ কম্পিউটারের তুলনায় এই সুপারকম্পিউটার গুলো অতি দ্রুত সমাধান দিতে পারে।
বর্তমানে মহামারি প্রতিরোধে টেকনোলজি , আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ডাটা সায়েন্স একসাথে কাজ করছে।
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1