মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিরল প্রজাতির ‘মগজ-খেকো’ অ্যামিবায় আক্রান্ত হয়েছেন এক ব্যক্তি। এক কোষী এই মুক্তজীবী প্রাণীটি মানব শরীরে ঢুকে মস্তিষ্ক ধ্বংস করে দেয়। সম্প্রতি দেশটির ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যের হিলসবোরো কাউন্টিতে ‘নাইজেলরিয়া ফ্লাওয়ারি’ নামের অ্যামিবাটির খোঁজ মিলেছে।
গত ৩ জুলাই, শুক্রবার ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগ এক ব্যক্তির বিরল এই অ্যামিবায় আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। সংবাদে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। এ নিয়ে ১৯৬২ সাল থেকে ফ্লোরিডায় এতে আক্রান্ত হওয়ার ৩৭টি ঘটনার কথা জানা গেলো।
এর আগে ২০১২ সালে পাকিস্তানে ‘নাইজেলরিয়া ফ্লাওয়ারি’ অ্যামিবার সংক্রমণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এছাড়া ভারতেও এই অ্যামিবার সংক্রমণ দেখা গিয়েছিল।
১৯৬২ সালে প্রথম Naegleria fowleri নামের এই অ্যামিবা শনাক্ত করা হয়েছিল। তারপর থেকে মাত্র দেড়শ জনকে এই এ্যামিবায় ধরছে। তবে মৃত্যুহার অনেক বেশি। এই দেড়শ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জন বেচে ফিরেছে, বাকি সবাই মৃত্যুবরণ করে!
এখনো পর্যন্ত এর কোনো কার্যকর ওষুধ পাওয়া যায়নি। তবে, করোনার মত এই অ্যামিবা ছোঁয়াচে না। হাঁচি কাশির মাধ্যমে ছড়ায় না। কিংবা এই অ্যামিবা ওয়ালা পানি খেলেও কোনো ক্ষতি হয়না। নাক দিয়ে পানি ঢুকলেই মূলত সমস্যা কারণ তখন তা সরাসরি মস্তিষ্কের দিকে চলে যাওয়ার সুযোগ পায়।
সাধারণত নদী, পুকুর, হ্রদ ও ঝরনার পানি যেখানে উষ্ণ সেখানেই বাস করে এই অ্যামিবাটি। আর মানুষ সেখানে সাঁতার কাটতে গেলে নাক দিয়ে শরীরে ঢুকে পড়ে। মস্তিষ্কে ঢুকতে পারলে অ্যামিবাটি স্নায়ুকোষ ধ্বংস করে ফেলে বলে ‘নাইজেলরিয়া ফ্লাওয়ারি‘কে বিজ্ঞানীরা ‘মগজ-খেকো’ অ্যামিবাও বলে থাকেন।
এছাড়া শিল্পকারখানার উষ্ণ পানি পড়ে এমন মাটি বা সুইমিংপুলেও দেখা যেতে পারে এই ধরনের অ্যামিবার। এরা মস্তিষ্কে ঢুকে পড়ার পর তেমন গুরুতর কোনো উপসর্গ দেখা যায় না। প্রাথমিক অবস্থায় হালকা মাথাব্যথা, ঘাড়ব্যথা, জ্বর ও পেটব্যথা দেখা দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদে এটি স্নায়ুকোষের ব্যাপক ক্ষতি করতে সক্ষম।
জুলাই , আগস্ট, সেপ্টেম্বর–এই ৩ মাসে আমেরিকায় এই মগজ-খেকো অ্যামিবার সংক্রমন দেখা যায়। ডাক্তাররা এই ৩ মাস পুকুর বা নদীতে সাঁতার কাটতে নিষেধ করেন । সাঁতার কাটলেও নাকে প্রটেকশন নিতে হবে যেন কোনভাবেই নাকের মধ্যে পানি না ঢুকে।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ আদনান সামি