১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিজ্ঞানীরা ম্যাঙ্গানিজ খেকো ব্যাকটেরিয়ার অস্তিত্বের অনুমান করছেন। তবে, এর আগে এমন ব্যাকটেরিয়ার সন্ধান মিলেনি। দুজন অনুজীব বিজ্ঞানী সিংকে গোলাপী বর্ণের ম্যাঙ্গানিজ কার্বনেটের দ্রবণে একটি পাত্র ভিজিয়ে রেখে দিয়েছিলেন। দশ সপ্তাহ পর তারা ফিরে এসে দেখেন পাত্রের দ্রবণ কালচে ও ক্রাস্টযুক্ত একটি নতুন পদার্থে প্রতিস্থাপিত হয়েছে এবং এর জন্য দায়ী দুটি নতুন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া, যা গবেষকরা চলতি বছরের জুলাইয়ে নিশ্চিত করেছেন।
অস্থায়ী ভাবে ব্যাকটেরিয়া দুটির নাম দেয়া হয়েছে Candidatus Manganitrophus nodulliformans এবং Ramlicbacter lithotrophicus। এই ব্যাকটেরিয়া দুটি ম্যাঙ্গানিজের মতো ধাতু থেকে ইলেকট্রন ধার নিতে পারে এবং এগুলি বৃদ্ধির জন্য জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। ধাতুগুলি যখন ইলেকট্রন হারাতে থাকে, তখন তাতে জারন হতে থাকে; আবার, নোংরা পাত্রের ফলে তা ম্যাঙ্গানিজ কার্বনেট থেকে ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইডে রূপান্তরিত হয়। গবেষকরা বলছেন যে, উভয় প্রজাতি সম্ভবত নলের পানি থেকে এসেছে এবং ম্যাঙ্গানিজ অক্সাইড পানি দূষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করতে পারে।
Caltech নামক প্রতিষ্ঠানের অনুজীব বিজ্ঞানীরা এই ব্যাকটেরিয়ার আবিষ্কারক। “এগুলি প্রথম ব্যাকটেরিয়া যারা তাদের জ্বালানীর উৎস হিসেবে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করে”, বলেন Caltech এর environmental microbiology বিভাগের অধ্যাপক Jared Leadbetter। তিনি পোস্টডক্টরাল পন্ডিত Hang Yu এর সহযোগিতায়, Journal Nature এর ১৬ ই জুলাই সংখ্যায় ফলাফলগুলি বর্ণনা করেছেন এইভাবে- “প্রাকৃতিক জীবাণুগুলির একটি দুর্দান্ত দিক হলো তারা কোষের জন্য দরকারি শক্তি জোগাতে ধাতবপদার্থের মতো আপাতদৃষ্টিতে অপ্রত্যাশিত উপকরণের সাথে বিপাকক্রিয়া ঘটাতে পারে।”
গবেষণায় আরো প্রকাশিত হয়েছে যে, ব্যাকটেরিয়াগুলি কার্বন ডাই অক্সাইডকে বায়োমাসে রূপান্তর করতে ম্যাঙ্গানিজ ব্যবহার করতে পারে যা Chemosynthesis নামে পরিচিত। এইদিকে বায়োমাস বলতে, যখন কার্বন ডাই অক্সাইড এবং বাষ্প গ্যাসীয়করণে উপস্থিত থাকে, তখন কার্বন ডাই অক্সাইড প্রথমে কঠিন জ্বালানিকে সংশ্লেষণ গ্যাসে রূপান্তরিত করে, জল-গ্যাসীয় প্রক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়া দেখাতে কিছু সংশ্লেষণ গ্যাসের সাথে বাষ্পের কিছু পরিমাণ শক্তি মুক্ত করাকে বোঝায়।
পূর্বে, গবেষকরা ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক সম্পর্কে জানতেন যা ম্যাঙ্গানিজকে জারিত করতে পারে অর্থাৎ ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে। তবে, তারা কেবলমাত্র অনুমান করেছিলেন এই ব্যাকটেরিয়ার ব্যাপারে। যা এখন তারা আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছেন।
ফারহানা মজিদ/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র : সাইন্স টেক ডেইলি