সর্বশেষ গবেষণা অনুযায়ী, হাবল টেলিস্কোপের মাধ্যমে জানা গেছে যে মহাবিশ্ব খুব দ্রুত সম্প্রসারিত হচ্ছে। মহাবিশ্ব-এর এই সম্প্রসারণ-এর হার বিজ্ঞানীদের দেওয়া মডেল থেকে প্রাপ্ত পূর্বাভাস থেকেও দ্রুত। কোনো অজানা মহাজাগতিক শক্তিই এর পেছনে দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আধুনিক জ্যোতির্বিদ্যার সবচেয়ে বড় puzzle হচ্ছে মহাবিশ্ব সম্প্রসারণ। সাম্প্রতিককালে, নক্ষত্র এবং ছায়াপথের বিভিন্ন পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে নতুন তথ্য জানা গিয়েছে। এক্ষেত্রে, গবেষকদের দেয়া মহাবিশ্বের সেরা মডেলগুলির পূর্বাভাসের চেয়েও অনেক দ্রুত সম্প্রসারণ ঘটছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই ব্যাপারটিকে বিজ্ঞানিরা সৃষ্টিতত্ত্বের ‘Looming Crisis’ বা ‘আসন্ন সংকট’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হাবল স্পেস টেলিস্কোপ গবেষকদের একটি দল জানিয়েছেন যে-অতিদ্রুত এই সম্প্রসারণ কোনো মহাজাগতিক উপাদানগুলির অপ্রত্যাশিত প্রভাব- যা এখনও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জ্ঞানের পরিসীমার বাইরে।
এই ধাঁধাটিকে বলা হয় ‘Hubble Tension‘ যা বিজ্ঞানী Edwin Hubble (এডউইন হাবল) এর নামে নামকরণ করা হয়েছে। তিনি ১৯২৯ সালে দেখতে পান যে, একটি গ্যালাক্সি আমাদের থেকে যত দূরে অবস্থান করে, সেটি তত দ্রুতই আমাদের থেকে সরে যেতে থাকে। এই পর্যবেক্ষণটি মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের বর্তমান ধারণার পথ প্রশস্ত করতে সাহায্য করেছিল যে ‘বিগ ব্যাং‘ থেকে শুরু করে এর পর থেকেই মহাবিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে।
গবেষকরা দুটি প্রাথমিক উপায়ে মহাবিশ্বের বর্তমান প্রসারণের হার পরিমাপ করার চেষ্টা করেছেন। এই পর্যবেক্ষণটি মহাবিশ্ব সম্পর্কে 13 বিলিয়ন বছরেরও বেশি মহাজাগতিক ইতিহাস এর ধারণা দেয়। গবেষণা থেকে সম্প্রসারণ এর কারণস্বরূপ কিছু মূল মহাজাগতিক উপাদান এর ব্যাপারে আভাস পাওয়া গেছে যেখানে ‘Dark Energy‘ অন্যতম। ‘ডার্ক এনার্জি’ এমন এক রহস্যময় শক্তি যা মহাবিশ্বের প্রসারণকে ত্বরান্বিত করছে বলে মনে করা হয়।
কিন্তু এই দুটি পদ্ধতি মহাবিশ্বের বর্তমান সম্প্রসারণের হার প্রায় ৮% কথাটির সাথে একমত নয়। পরিবর্তন এর এই হার খুব বেশি বলে মনে নাও হতে পারে। কিন্তু এর সত্য হলে এর অর্থ হচ্ছে মহাবিশ্বের দ্রুত প্রসারণ ঘটছে। একে ‘ডার্ক এনার্জি‘ দিয়েও ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়।
‘Hubble Tension’ নামক এই নতুন ব্যাপারটি আরো পরিষ্কার হওয়ার জন্য আরো অনেক গবেষণা প্রয়োজন রয়েছে। এ ব্যাপারে অন্যান্য গবেষনা যেমন – ESA’s Gaia satellite, যেটি ২০১৪ সাল থেকে মিল্কিওয়ে ম্যাপিং করে আসছে এবং James Web Space Telescope যেটি ডিসেম্বর,২০২১ এর শেষে চালু হওয়ার কথা, এসব থেকে প্রাপ্ত তথ্য গবেষণাতে আরো সহায়তা করবে বলে বিজ্ঞানিরা আশাবাদী। বিজ্ঞানী Freedman বলেন-” এই ধাঁধার সমাধান এর জন্য যা যা করা সম্ভব আমরা চেষ্টা করছি। আশা করছি এই রহস্যের শেষ পর্যন্ত আমরা শীঘ্রই যেতে পারবো।”
রায়হান খন্দকার / নিজস্ব প্রতিবেদক
+1
+1
1
+1
+1
+1
+1
+1