প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় আজ মানুষের পদার্পণ প্রায় সকল ক্ষেত্রে। প্রতিনিয়তই বিজ্ঞানের সফলতা দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। নতুন নতুন উদ্ভাবনী কৌশলে বিজ্ঞানীরাও প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই সংযুক্তিতে সামনে এলো নতুন তথ্য, ২০২৪ সালের মধ্যে মহাকাশে-ই মুভি শুটিং এর জন্য ফিল্ম স্টুডিও তৈরি করার পরিকল্পনা!
টম ক্রুজের আসন্ন ‘স্পেস-সেট’ ফিল্মের সহ-প্রযোজক এবং ‘স্পেস এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ‘ এর যৌথ বিবৃতিতে এমন তথ্যই সামনে এসেছে যে, পৃথিবীর ২৫০ মাইল উপরে একটি প্রোডাকশন স্টুডিও তৈরি হবে। টম ক্রুজের আসন্ন স্পেস ফিল্ম সহ-প্রযোজনাকারী সংস্থাটি শূন্য মাধ্যাকর্ষণে একটি ফিল্ম প্রোডাকশন স্টুডিও এবং একটি স্টেডিয়াম স্থাপনের পরিকল্পনা করেছেন।
তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে স্পেস এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ (SEE) বলেছে যে, তাদের SEE-1 নামের মডিউলটি আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (ISS)-এর বাণিজ্যিক শাখা অক্সিওমের স্টেশনে সংযুক্ত করবে।
এই সাইটটির মাধ্যমে মহাকাশে-ই মুভি, টেলিভিশন, সঙ্গীত এবং ক্রীড়া ইভেন্টগুলি প্রচার করা সম্ভব হবে, তবে সেখানে দর্শকদের ধারণ ক্ষমতা এখনও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। সেইসাথে কন্টেন্ট নির্মাতারা যদি চান, তাহলে পৃথিবীর ২৫০ মাইল উপরে কোনোকিছু রেকর্ড, সম্প্রচার এবং লাইভস্ট্রিম করতে পারবেন।
স্পেস এন্টারটেইনমেন্ট এন্টারপ্রাইজ (SEE) সংস্থাটির তৈরিকৃত সুবিধাগুলি তৃতীয়পক্ষরা ও ব্যবহার করতে পারবে তবে এই সংস্থাটির নিজস্ব কিছু কন্টেন্টও থাকবে। অক্সিওম স্টেশন তারপর ২০২৮ সালে ISS থেকে আলাদা হবে। চমৎকার ব্যাপার হলো, অক্সিওম কোম্পানিটি এই মাসের শুরুর দিকে বাণিজ্যিক শাখা তৈরির চুক্তি জিতেছে।
SEE সহ-প্রতিষ্ঠাতা দিমিত্রি এবং এলেনা লেসনেভস্কি এর মতে, “SEE-1 মানবসভ্যতার জন্য একটি ভিন্ন পরিমণ্ডলে চলে যাওয়ার এবং মহাকাশে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করার একটি অবিশ্বাস্য সুযোগ। এটি উদ্ভাবনী অবকাঠামোতে সীমাহীন বিনোদনের সম্ভাবনায় পরিপূর্ণ একটি অনন্য স্থান হতে চলেছে, যা সৃজনশীলতার একটি নতুন বিশ্ব উন্মোচন করবে”।
বিশ্বব্যাপী লিডার অক্সিওম স্পেস কোম্পানি এই অত্যাধুনিক, বৈপ্লবিক সুবিধা তৈরি করার সাথে, SEE-1 এর পাশাপাশি সর্বোচ্চ মানের মহাকাশ কাঠামোও প্রদান করবে যা দুই ট্রিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক বিনোদন শিল্পকে লোয়ার-আর্থ কক্ষপথে সম্প্রসারণ করতে সক্ষম করবে।
মহাকাশে ফিল্মের শুটিং হবে, এই বিষয়টি নিয়ে অনেক আগে থেকে আলোচনা চলে আসলেও যৌক্তিক এবং আর্থিক বাধাগুলির জন্যে তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় নি। তবে শূন্য মাধ্যাকর্ষণ এবং মহাকাশের ক্লাস্ট্রোফোবিয়া পুনরায় তৈরি করার সাম্প্রতিক প্রচেষ্টাগুলি মূলধারার চলচ্চিত্র নির্মাতাদের জন্য লাভজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলফনসো কুয়ারনের ২০১৩ সালের ফিল্ম গ্র্যাভিটি-তে স্যান্ড্রা বুলক এবং জর্জ ক্লুনির ওজনহীনতা এবং আন্তঃকক্ষপথ ফ্রি-ফল (মুক্তভাবে পতন) এর সত্যতার পিছনে ছিল বছরের পর বছর গবেষণা এবং প্রচেষ্টা এবং মিলিয়ন ডলারের উদ্ভাবন।
সেই ফিল্মটি তৈরি করতে লেগেছিল $100m, যা গ্লোবাল বক্স অফিসে $723m উপার্জন করেছে এবং সাতটি অস্কার জিতেছে। SEE-1 প্রজেক্টটি যদি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়, তবে এটি সত্যিই বিনোদন জগতে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটাবে।
রিদিতা ইফরাত/ নিজস্ব প্রতিবেদক