ফেসবুক, যুক্তিসঙ্গতভাবে বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। যেহেতু বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ, তাই আমাদের ব্যক্তিগত, সামাজিক, ব্যবসায়িক ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রে ফেসবুকের উপর নির্ভর করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, ফেসবুক অনেক ব্যক্তি এবং ব্যবসার জন্য ব্র্যান্ড তৈরি কিংবা ব্যাপক প্রচারণার ক্ষেত্রে সাহায্য করেছে। উপরন্তু, এটি সারা বিশ্বের মানুষের জন্য বিনোদনের একটি প্রধান উৎস।
যেহেতু এটি একটি সামাজিক প্লাটফর্ম, তাই এর কোন অবস্থান বা বৈশ্বিক প্রতিবন্ধকতা নেই এবং এটি আপনাকে বিশ্বের যে কোন স্থান থেকে যেকোনো মানুষের সাথে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করতে পারে।
যদি আমরা ফেসবুকের উপকারি দিক টি দেখি তাহলে আমরা এর অনেক দরকারি বৈশিষ্ট্য অনুসন্ধান করতে পারি, যেমনঃ
- যদি কেউ তার ব্লগ, পণ্য, ব্যবসা, এমনকি সেবা বাজারজাত করার উপায় খুঁজতে থাকে, তাহলে ফেসবুকের চেয়ে ভালো উপায় নেই কারণ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রায় তিন বিলিয়ন সক্রিয় ব্যবহারকারী রয়েছে ফেসবুকে।
- সামাজিক যোগাযোগের বিপ্লবে ফেসবুক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
- ফেসবুকের কল্যাণে আমরা এখন আমাদের চারপাশের মানুষের সাথে অনেক বেশি সংযুক্ত।
- পাশাপাশি , ফেসবুকের মাধ্যমে অনেক পুনর্মিলনও ঘটছে।
বর্তমানে পৃথিবীতে প্রায় তিন বিলিয়ন মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন, যা নিঃসন্দেহে একটি বিস্ময়কর পরিসংখ্যান। যেহেতু পৃথিবীর অসংখ্য মানুষ বর্তমানে ফেসবুককে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে, তাই অবশ্যই এই বহুল ব্যবহ্রত মাধ্যমটির খারাপ দিক গুলো সম্পর্কে অবগত এবং সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরী।
- “২০১৮ সালের শুরুতে ফেসবুক-কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার তথ্য কেলেঙ্কারি ছিল একটি প্রধান রাজনৈতিক কেলেঙ্কারি, যখন জানা যায় যে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা তাদের সম্মতি ছাড়াই লক্ষ লক্ষ মানুষের ফেসবুক প্রোফাইলের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছে এবং রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তা ব্যবহার করেছে।
- এছাড়াও ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে, ফেসবুক ব্যবহারকারীদের অনুসন্ধান তথ্যের উপর নজর রাখার একটি পদ্ধতি চালু রাখার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। যদিও ফেসবুক কর্তৃপক্ষ ব্যবহারকারীদের সংগৃহীত ইতিহাস অনুসন্ধানের উপর ভিত্তি করে এই সুপারিশগুলি তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে।
- অনেকেই আছেন, যারা ফেসবুকে আসক্ত। অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে মানুষ এই ভার্চুয়াল বা কৃত্রিম জগতে বাস করতে শুরু করে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা ফেসবুকে কাটায়। এই কারণে, মানব জীবনে একটি নতুন ধরনের রোগ এসেছে যাকে বলা হয় ফেসবুক আসক্তি, যেখানে ব্যক্তি ফেসবুকে অনেক বেশি সময় ব্যয় করে এবং, তার এই আসক্তি কাটাতে পরবর্তীতে অসুবিধা হয়। উপরন্তু, এই রোগ ব্যবহারকারীকে বাস্তব জগৎ থেকে দূরে রাখে এবং অবশেষে বাস্তব জীবনের সম্পর্ক, আত্মীয়, স্কুল বা কর্মজীবনে সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি ফেসবুক সাইটের সবচেয়ে বড় অসুবিধা।
- যেহেতু বর্তমানে এটি বিশাল একটা ব্যবসায়ীক প্লাটফর্ম হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে, ফলে কিছু প্রতারক তাদের বিষয়বস্তু বা আকর্ষণীয় ভুয়া অফারের মাধ্যমে মানুষকে বোকা বা ভ্রান্ত পথে পরিচালিত করতে ফেসবুক ব্যবহার করে।
- ফেসবুকের খারাপ দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি হলো এর অপব্যবহার। যেহেতু ফেসবুকে অ্যকাউন্ট খোলা তেমন কঠিন কোনো বিষয় না, ফলে অনেক ব্যবহারকারীকে দেখা যায় একের অধিক অ্যকাউন্ট ব্যবহার করতে। যার ফলে ভুয়া প্রোফাইল তৈরি , পরিচয় গোপন করে হয়রানির শিকার করা, উত্ত্যক্ত করা, চুরি এমনকি ব্ল্যাকমেইলের মতো ঘটনা ঘটছে অহরহ। যার অন্যতম বড় শিকার দেশের কিশোর ও তরুণ সমাজ।
- ফেসবুকে অনেক গ্রপ এবং পাতা প্রকাশিত হয়েছে যা অন্যান্য ধর্ম, ব্যক্তিত্ব, জাতি ইত্যাদির অপব্যবহার বা লঙ্ঘনের জন্য তৈরি করা হচ্ছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড সামাজিক পরিবেশকে বিঘ্নিত করে।
যাইহোক, যেহেতু আমরা সবাই জানি যে এই জগতের প্রতিটি বস্তুর ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যবহার পদ্ধতি আছে, তাই আমাদের সবকিছুকে এমন ভাবে ব্যবহার করতে হবে যেখানে তা অন্যের জীবনে কোন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে না। ফেসবুক শুধুমাত্র একটি সাইট বা অঙ্গন, কিন্তু আমরা কিভাবে এটি ব্যবহার করি তা আমাদের উপর নির্ভর করে।
সাদিয়া মীম / নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ অনলাইন সায়েন্স
+1
5
+1
1
+1
1
+1
1
+1
1
+1
4
+1
3