নাইটসেল (Night Cell) এক ধরণের তড়িৎ-সৌরকোষ যা রাতেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে নবায়নযোগ্য উৎসের ব্যবহার নিশ্চিত করে।
বর্তমানে উন্নত বিশ্বের প্রায় সব দেশই নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎস হিসেবে সৌর বিদ্যুতের ব্যবহারের প্রতি খুবই মনোযোগী। কিন্তু, শীতপ্রধান দেশগুলোতে দিনের দৈর্ঘ্য খুব কম হওয়ায় এ পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যাঘাত ঘটে।
সম্প্রতি UC Davis এর একজন গবেষক এমন এক ধরনের তড়িৎ-সৌর কোষ আবিষ্কার করেছেন যা রাতেও সৌরকোষ এর অনুরূপ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। গবেষক মুনডের মতে, এই বিশেষ আলোক – সংবেদী কোষ প্রতি বর্গ মিটারে প্রায় ৫০ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম।
মুনডের প্রকাশিত গবেষণাপত্র (জানুয়ারী,২০২০) হতে দেখা যায় এই বিশেষ কোষের কর্মদক্ষতা সাধারণ সৌরকোষের এক চতুর্থাংশ। জেরেমি মুনডে যিনি সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড হতে UC Davis এ যোগদান করেছেন, তার ভাষ্য মতে, নাইটসেলের বিদ্যুৎ উৎপাদন কৌশল, সাধারণ সৌর কোষের মতো হলেও এই ক্ষেত্রে বিপরীত কৌশল প্রয়োগ করা হয়েছে।
সাধারণত, উত্তপ্ত বস্তুসমূহ অবলোহিত রশ্মির মতো তাপ বিকিরণ করে থাকে। সূর্যও ঠিক একই প্রক্রিয়ায় তাপ বিকিরণ করে এবং সাধারণ সৌর কোষ সেই আলোকশক্তিকে সংরক্ষণ করে ফটোবায়োটিক প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে।
মহাশূন্য অত্যন্ত শীতল, কোন উত্তপ্ত বস্তুকে যদি আকাশের দিকে তাক করে রাখা হয় তাহলে তাপগতিবিদ্যার সূত্র অনুসারে তাপ মহাশূন্যে যাবে অর্থাৎ শীতল বস্তুতে বিলীন হবে এবং বস্তুটি ধীরে ধীরে শীতল হবে। ঠিক একই ধরনের প্রক্রিয়া মানুষ শত বছর ধরে শীতলতা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ব্যবহার করে আসছে বলে জানান মুনডে।
সৌরকোষ সূর্যালোক শোষণ করে বিভব উৎপন্ন করে যেটি পরিবাহীর মধ্য দিয়ে তড়িৎ চালনা করে থাকে। কিন্তু, নতুন আবিষ্কৃত প্রোটোটাইপ যন্ত্রটিতে বিভব প্রবাহ সাধারণ সৌরকোষের বিপরীতে ঘটলেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। মুনডে বলেন, নাইট সেলের যান্ত্রিকগত কাঠামো ভিন্ন হলেও এতে মেকানিজম ব্যবহৃত হয়েছে গতানুগতিক সৌর কোষের মতো।
নাইটসেলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে থার্মোডায়াটিভ (Thermodiative) না
থার্মোডায়াটিভ যুক্ত নাইটসেল রাতের মতো দিনেও কাজ করতে সক্ষম।তবে এক্ষেত্রে এটিকে সরাসরি সূর্যালোক থেকে দূরে বা আগত রশ্মিকে পরিশ্রুত করে ব্যবহার করতে হবে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী গ্রীড সমূহের দিবারাত্রির উৎপাদন ব্যবস্থায় ভারসাম্য আনতে আবিষ্কৃত পদ্ধতিটি অনেক কার্যকর হবে। যার মাধ্যমে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য উৎসের মাধ্যমে শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে।