১৯২৭ সাল থেকে ৯২ বছর ধরে টাইম ম্যাগাজিন “পার্সন অব দ্য ইয়ার” পুরস্কার দিয়ে আসছে। তবে, এ বছর প্রথম বারের মত তারা “কিড অব দ্য ইয়ার” পুরষ্কার দেয়া শুরু করেছে।
টাইম ম্যাগাজিনের এই পুরস্কারের জন্য এবছর ৫০০০ হাজারের ও বেশি শিক্ষার্থীদের মনোনীত করা হয়। তুমুল প্রতিযোগিতার পর ১৫ বছরের গীতাঞ্জলি রাও শীর্ষ স্থান দখল করেন এবং জিতে নেন টাইম ম্যাগাজিনের প্রথম “কিড অব দ্য ইয়ার” পুরষ্কার।
১৫ বছরের এই ভারতীয় মার্কিন গীতাঞ্জলি রাও এর জন্ম মার্কিন কলোরাডোর ডেনভার নামক প্রদেশে। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি ব্যবহার করে এমন ডিভাইস তৈরি করেছেন যার ব্যবহারে আমরা দূষিত পানির ব্যাপারে বুঝতে পারব এবং এর আগে তিনি সাইবার বুলিং সনাক্তকারী একটি অ্যাপস ও তৈরি করেছেন।
তাছাড়াও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে আগ্রহ তৈরি করার জন্য তিনি গ্রাম্য স্কুল, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইন্জিনিয়ারিং এবং গণিত বিষয়ক কিছু প্রতিষ্ঠানের সাথেও যুক্ত আছেন।
১২ বছর বয়সেই তিনি খুব দ্রুত, অল্প খরচে পানিতে সীসার পরিমান সনাক্ত করার ডিভাইস আবিষ্কার করেন। এর জন্য, গীতাঞ্জলি রাও এর নাম অ্যামেরিকার শীর্ষ তরুণ বিজ্ঞানীদের মধ্যে এসেছিলো।
এছাড়াও তিনি এপিওন (Epione) নামে একটা ডিভাইস তৈরি করেন যা ওপিওয়েড আসক্তির প্রাথমিক অবস্থা নির্ণয় করতে পারবে।
পুরস্কার জেতার পর বিখ্যাত অভিনেত্রী এবং সোশ্যাল এক্টিভিস্ট অ্যাঞ্জেলিনা জোলি টাইম ম্যাগাজিনের পক্ষ থেকে তার ইন্টারভিউ নেন। ইন্টারভিউতে গীতাঞ্জলি রাও বলেন “আমি হয়ত দেখতে একজন আর্দশ বিজ্ঞানীদের মত নই, যে রকম টা আসলে টিভি তে দেখানো হয় যেমন: অনেকটা বয়স্ক প্রকৃতির লোক ইত্যাদি।”
তিনি আরও বলেন,
“আমাদের জেনারেশন প্রতিনিয়তই নতুন অনেক সমস্যার সম্মুখীন হই যা আমরা কখনও দেখিনি এবং একই সাথে পুরানো কিছু সমস্যাও আমাদেরকে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ করে যাচ্ছে। যেমন: আমরা এখনও মানবাধিকার সমস্যার সম্মুখীন হই, আবার এই মূহুর্তে পুরো পৃথিবী যাচ্ছে এক মহামারির মধ্য দিয়ে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং সাইবার বুলিং আমাদের নতুন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে এটা ঠিক, আমরা আমাদের আশেপাশের সবকিছুর সাথেই বিজ্ঞানের সংযোগ খুঁজে বের করতে পারি। আর আমার মতে, বিজ্ঞানই আমাদের এই সমস্যা থেকে বের করে নিয়ে আসতে পারবে। কারণ, বিজ্ঞান এবং উদ্ভাবন করা দুটো বিষয়-ই অনেক মজার। অনেক সমস্যাই আছে যা আমরা তৈরি করিনা, কিন্তু আমাদেরকে তার সমাধান বের করতে হবে এবং তা আমরা করতে পারি নিত্যনতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে। আমার মতে, যে-কেউ চাইলেই উদ্ভাবক হতে পারবে এবং যে-কেউ চাইলেই বিজ্ঞান নিয়ে কাজ ও করতে পারবে।”
টাইম ম্যাগাজিনের মতে, এই নতুন “কিড অব দ্য ইয়ার” সম্মাননা হলো আমাদের সর্বকনিষ্ঠ জেনারেশন থেকে ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব খুঁজে পাবার একটি চমৎকার সুযোগ।
আল আমিন/ নিজস্ব প্রতিবেদক
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি, এনবিসি নিউজ