অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেডের গুগল বলছে তারা কম্পিউটিং গবেষণায় যুগান্তকারী সাফল্য লাভ করেছে।
তাদের কোয়ান্টাম কম্পিউটার একটা জটিল সমস্যা সমাধান করতে কয়েক মিনিট সময় নেয় যা সমাধান করতে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে শক্তিশালী সুপার কম্পিউটারেরও কয়েক হাজার বছর লেগে যাবে।গুগল একে ‘কোয়ান্টাম সুপ্রিমেসি’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
গুগলের গবেষকরা আশা করছেন কয়েক বছরের মধ্যে কোয়ান্টাম কম্পিউটার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ম্যাটারিয়াল সায়েন্স,রসায়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নতি ঘটাতে সক্ষম হবে।গুগল বর্তমানে প্রথম কোম্পানি হিসেবে এই প্রযুক্তির বাণিজ্যিকীকরণ ঘটাতে মাইক্রোসফট ও আইবিএম এর সাথে প্রতিযোগিতার দৌড়ে রয়েছে।
গুগলের এই আবিষ্কার বিখ্যাত বিজ্ঞান সাময়িকী নেচারের পাতায় প্রকাশ করা হয়েছে।আইবিএম গুগলের এই দাবি নাকচ করে দিয়ে একটি ব্লগ প্রকাশ করেছে। গুগলের সিইও সুন্দর পিচাই তাদের এই সাফল্যকে প্রথম রকেট যা উড্ডয়ন ও মহাকাশকে স্পর্শ করতে সক্ষম হয়েছিল তার সাথে তুলনা করেছেন।
কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কী?
কোয়ান্টাম থিওরির(যে তত্ত্ব এটমিক ও সাবএটমিক পর্যায়ে শক্তি ও বস্তুর প্রকৃতি নিয়ে আলোচনা করে) ওপর ভিত্তি করে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং কাজ করে।১৯৮০ এর দশক থেকেই বিজ্ঞানীরা এরকম কম্পিউটার তৈরি করার চেষ্টা করছিলেন।ক্লাসিকাল কম্পিউটিং দুটি লজিক্যাল অপারেশন নিয়ে কাজ করে – ০ এবং ১।
অন্যদিকে কোয়ান্টাম কম্পিউটিং এর মৌলিক একক হল কিউবিট (কোয়ান্টাম বিট)।
এতে চারটি অপারেশন ব্যবহৃত হয়।কিউবিট একইসাথে ০ এবং ১ দুই অবস্থাতেই থাকতে পারে।কিউবিট এ এক বৃদ্ধি পেলে কম্পিউটেশনাল পাওয়ার ও এক্সপোনেশিয়ালভাবে বেড়ে যায়।
কোয়ান্টাম কম্পিউটার ব্যবহার শুরু হতে আরও এক যুগ সময় লাগতে পারে বলে বলছেন গবেষকরা। তবে গবেষণা থেমে নেই।
এই গবেষণা কাজে অংশ নিচ্ছেন ইন্টারনেটে সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ডেনমার্কের আরহুস বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের রিকেন রিসার্চ ইন্সটিটিউট, জার্মানির জিগেন বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্রিটেনের বিজ্ঞানীরা।
বিশ্বের ১৮টি কোম্পানি কোয়ান্টাম কম্পিউটার তৈরি পরিকল্পনা নিয়েছে। যার মধ্যে, গুগল, মাইক্রোসফট, অ্যায়ারবাস, আলিবাবার মতো বড় কোম্পানিগুলো রয়েছে।
হয়তো কয়েক বছর পরেই আমরা শুনতে পাবো কোম্পানিগুলোর কেউ তেরী করে ফেলেছে কোয়ান্টম ডেস্কটপ যা ধিরে ধিরে হয়ে যাবে আমাদের আজকের ডেস্কটপ বা লেপটপের মতো দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী ।