যুক্তরাজ্যে করোনা শনাক্তের জন্য ৩.৫ মিলিয়ন অ্যান্টিবডি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে। এই ধরনের পরীক্ষায়, মাত্র এক ফোঁটা রক্ত নিয়ে তা পরীক্ষার মাধ্যমে ভাইরাস শনাক্ত করা যায়। এই পরীক্ষা মূলত করা হয় যারা ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছিলেন কিন্তু এখন তারা সুস্থ আছেন। অর্থাৎ তারা তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন।
অ্যান্টিবডি হলো এমন একটি প্রোটিন যা দেহের শ্বেত রক্তকণিকা, বিভিন্ন সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য তৈরী করে। এগুলো ভাইরাসের সাথে আবদ্ধ হয়ে কোষকে সংক্রমিত হতে বাঁধা দেয়। সংক্রমণটি শেষ হওয়ার পরেও ভাইরাস অনেক দিন রক্তে থাকতে পারে। অ্যান্টিবডি টেস্টগুলো সাধারণত অন্যান্য ভাইরাস শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়।
ফিলাডেলফিয়ার উইষ্টার ইনস্টিটিউটের ভ্যাকসিন এন্ড ইমিউনোথেরাপি সেন্টারের পরিচালক ওয়েইনার এবং ড্রেক্সেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন চার্লস কেয়ার্নস অ্যান্টিবডি টেস্ট কীভাবে কাজ করে এবং টেস্টগুলোর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ কি কি তা নিয়ে কথা বলেছিলো।
প্রশ্নঃ অ্যান্টিবডি টেস্ট কেন করা হয়?
কেয়ার্নসঃ অ্যান্টিবডি টেস্ট করে দেখা হয় যে, তা কোনো নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের বিশেষত ভাইরাসের সংস্পর্শে এসেছে কিনা। এই ব্রিটিশ টেস্টগুলো দুটি উপায়ে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। তারা হয় রক্তে ভাইরাসের বৈশিষ্ট্যের অনুরূপ ডিজাইন করা অ্যান্টিজেন ব্যবহার করে অথবা বিপরীতভাবে, ভাইরাসকে ফাঁদে ফেলার জন্য ডিজাইন করা একটি (মানবসৃষ্ট) অ্যান্টিবডি ব্যবহার করে রক্তে ভাইরাস শনাক্ত করে।
প্রশ্নঃ এটি সংক্রমণ শনাক্তকারী টেস্টের থেকে কীভাবে আলাদা?
কেয়ার্নসঃ ডায়াগনস্টিক টেস্ট ‘RT-PCR’ ব্যবহার করে। আপনি একটি স্পুটাম নমুনা দিন যা করোনা ভাইরাস থেকে নির্দিষ্ট ভাইরাল RNA শনাক্ত করে। আপনি সক্রিয়ভাবে সংক্রমিত হয়েছেন কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য এটি একটি অন্যতম উপায়।
এক ফোঁটা রক্ত পরীক্ষা করে অ্যান্টিবডি টেস্ট অনেক দ্রুত করার মাধ্যমে আপনি সহজেই জানতে পারবেন আপনি covid-19 ভাইরাসে আক্রান্ত কিনা।
প্রশ্নঃ অ্যান্টিবডি টেস্ট কেন গুরুত্বপূর্ণ?
ওয়েইনারঃ যারা ইতিমধ্যে আরোগ্য লাভ করেছে তাদের RT-PCR পজিটিভ টেস্ট করা হবে না। কারণ তারা মাত্রই ভাইরাসটি থেকে মুক্ত হয়েছে। যারা সুস্থ হয়ে উঠেছেন তাদের সেই অ্যান্টিবডিগুলো ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে দেহকে সুরক্ষা দিবে। আমরা এখন সংক্রমিত ব্যক্তিদের সন্ধান করছি।
যারা ভাইরাসটি থেকে মুক্তি পেয়েছেন এবং যাদের পুনরায় সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই তাদের সন্ধান করাও গুরুত্বপূর্ণ। যাতে তারা বাইরে গিয়ে আমাদের বাফার হিসেবে কাজ করতে পারে। অ্যান্টিবডি টেস্টগুলো আমাদের কত সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হয়েছে এবং কতজন সুস্থ হয়েছে সে সম্পর্কে ধারণা দেয়।
প্রশ্নঃ এই টেস্টটি করার জন্য মূলত কাদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে?
ওয়েইনারঃ আমি মনে করি, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রথমে অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। কারণ এটা তাদের আত্মবিশ্বাস তৈরী ও বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ যা একজন রোগীর সুস্থ হওয়ার জন্য মূখ্য ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্নঃ যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টিবডি টেস্টের ব্যাপারে কী অবস্থা?
কেয়ার্নসঃ সেখানে প্রচুর মানুষ এই পরীক্ষা নিয়ে কাজ করছে। তবে আমরা মানসম্মত RT-PCR টেস্ট ডিজাইন করতে চাচ্ছি যার মাধ্যমে খুব সামান্য পরিমাণ নমুনা সংগ্রহ করে তা থেকে দ্রুত টেস্টের মাধ্যমে ফলাফল জানতে পারবেন।
তবে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্নটি হলো, একজন সংক্রমিত ব্যক্তি ঠিক কিরকম সাড়া দিবে এই টেস্টের ব্যাপারে। টেস্টগুলো সঠিক হওয়া দরকার এবং ভূয়া ও মিথ্যা দিকগুলো এড়ানো উচিত। এখন এটিই এই টেস্টের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
করোনাভাইরাস প্রসঙ্গ-
- রক্তের গ্রুপ ‘A’ হলে করোনা ঝুঁকি বেশি, ‘O’ হলে সবচেয়ে কম – বলছে চীনা গবেষণা
- লবণ মেশানো গরম পানি কি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করে ?-না
- করোনা যেভাবে আপনার শরীরের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে !(ইন্টারেক্টিভ ডিজাইনসহ)
- ফ্যাক্ট চেক: (মিথ্যা) এক টুকরা লেবুতেই ধ্বংস হবে করোনাভাইরাস
- আমেরিকা বা চীনের ষড়যন্ত্র নয়।করোনাভাইরাস এসেছে প্রকৃতি থেকেই-গবেষণা
- করোনাভাইরাস স্মার্টফোনে প্রায় ৯ দিন জীবিত থাকতে পারে – গবেষণা
- করোনা ভ্যাকসিন বাজারজাত করতে বছর সময় লেগে যেতে পারে
+1
+1
+1
+1
+1
+1
+1