বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার আমাদের জীবনকে সহজ করে তোলে। ২০২৪ সালেও বিজ্ঞানের অনেক নতুন নতুন বিষয় আবিষ্কৃত হয়েছে,তবে এইসব আবিষ্কারের পিছনে রয়েছেন অক্লান্ত পরিশ্রমী বিজ্ঞানীগণ যারা তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।চলুন জেনে আসি ২০২৪ সালে বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দেশ ও বিদেশের বিজ্ঞানীগণের নাম এবং তাদের অবদান।
০১. মো. সাইদুর রহমান
অধ্যাপক ড. মো. সাইদুর রহমান ৩১শে ডিসেম্বর ১৯৬৬ সালে পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে সানওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানো মেটেরিয়াল এবং এনার্জি টেকনোলজি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ও বিশিষ্ট প্রফেসর হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ন্যানো ফ্লুইড এবং ফেস চেঞ্জ ম্যাটারিয়াল ব্যবহারের মাধ্যমে সিস্টেমের কর্মদক্ষতা উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।
২০১৪-১৬ সালে তার গবেষণাক্ষেত্রে সর্বাধিক অবদান রাখা গবেষকদের মধ্যে শীর্ষ ১% এর মধ্যে তিনি স্থান পেয়েছেন। তার ৩৫০টির অধিক জার্নাল এবং গুগল স্কলারের ১৬০০ এর অধিক সাইটেশন বা উদ্ধৃতি প্রকাশিত হয়েছে। তার এই সাফল্যে তিনি বিদেশের মাটিতে নিজ গুণে বাংলাদেশকে পরিচিত করেছেন।
০২. গ্যারি ব্রুস রুভকুন
গ্যারি ব্রুস রুভকুন,মার্চ ১৯৫২ সালে ক্যালিফর্নিয়ার বার্কলিতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি আমেরিকান আণবিক জীববিজ্ঞানী এবং ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে গবেষক ও হার্ভার্ড মেডিকেল স্কুলের জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক। তার গবেষণার মূল বিষয় হলো জীবিত প্রাণীর কোষের ভেতরে মাইক্রো আরএনএ (micro RNA )কীভাবে কাজ করে এবং এটি কীভাবে বিভিন্ন প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে।
যার জন্য তিনি ২০২৪ সালে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তার আবিষ্কার করা lin-4 এবং lin-7 নামের মাইক্রো আরএনএ বার্তাবাহক আরএনএ (mRNA)এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে প্রোটিন তৈরি প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া তিনি কীভাবে শরীরের রোগ প্রতিরক্ষ ক্ষমতা কাজ করে শরীর থেকে ক্ষতিকারক পদার্থ বের হয় এমনকি পৃথিবীর বাইরে গ্রহে জীবন আছে কিনা এসব বিষয়ে গবেষণা করেন।
০৩. সেজুতি সাহা
ডা. সেজুতি সাহা একজন খ্যাতিমান বাংলাদেশি জিনতত্ত্ববিদ ও গবেষক। তিনি চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (CHRF)-এর মাইক্রোবায়োলজি এবং জিনোমিকস বিভাগের প্রধান। শিশুদের সংক্রামক রোগ নির্ণয় ও প্রতিরোধে তার গবেষণা আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত।
কোভিড-১৯ মহামারির সময় তিনি ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরন শনাক্ত করতে ভূমিকা রেখেছেন। তার গবেষণা শিশুদের মেনিনজাইটিসসহ বিভিন্ন রোগ দ্রুত শনাক্ত এবং চিকিৎসায় সহায়তা করেছে। ডা. সেজুতি নারীদের বিজ্ঞান চর্চায় উৎসাহিত করতে কাজ করেন এবং OWSD-Elsevier Foundation Award-সহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
০৪. ওয়াল্টার উইলেট
ড. ওয়াল্টার উইলেট পুষ্টিবিজ্ঞান এবং এপিডেমিওলজিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। তিনি খাদ্য ও জীবনধারার প্রভাবের মাধ্যমে প্রধান রোগগুলোর, যেমন হৃদ্রোগ এবং ক্যান্সার, কারণ এবং প্রতিরোধ পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করেছেন। ১৯৮০ সালে নার্সেস হেলথ স্টাডি এবং হেলথ প্রফেশনালস ফলো-আপ স্টাডি শুরু করেন, যা ৩০০,০০০ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে।
এই গবেষণাগুলি খাদ্য এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গভীর তথ্য প্রদান করে। ড. উইলেট ২,০০০-এরও বেশি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন এবং তার লেখা নিউট্রিশনাল এপিডেমিওলজি বইটি পুষ্টিবিজ্ঞানীর জন্য একটি মৌলিক গ্রন্থ। তিনি সাধারণ মানুষের জন্য চারটি বইও লিখেছেন, যা তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনধারা সম্পর্কে শিক্ষিত করে। তার গবেষণার জন্য তিনি বহু আন্তর্জাতিক পুরস্কার অর্জন করেছেন এবং ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ মেডিসিনের সদস্য।
০৫. ওয়েন্ডি ফ্রিডম্যান
ওয়েন্ডি ফ্রিডম্যান, কানাডার বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক, ২০২৪ সালে নেচার সাময়িকীর বর্ষসেরা ১০ বিজ্ঞান ব্যক্তিত্ব তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তিনি মহাবিশ্বের প্রসারণ হার নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। ফ্রিডম্যান জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) ব্যবহার করে দুটি নতুন “স্ট্যান্ডার্ড ক্যান্ডেল” পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন, যা মহাবিশ্বের বয়স এবং গঠন নিয়ে চলা বিতর্কের সমাধানে সাহায্য করেছে।
তার গবেষণায় হাবল ধ্রুবক (মহাবিশ্বের প্রসারণ হার) নিয়ে দীর্ঘদিনের বিতর্কের সমাধান হয়েছে, এবং তার এই অবদান তাকে মহাজগতের রক্ষক উপাধি এনে দিয়েছে। ফ্রিডম্যানের কাজ মহাবিশ্বের গঠন এবং ডার্ক এনার্জি সম্পর্কিত আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উন্মোচনে সহায়ক হবে।
০৬. জিওফ্রি হিন্টন
গডফাদার অফ AI উপাধি পাওয়া জিওফ্রি হিন্টন ১৯৪৭ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। হিন্টন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার স্নাতক সম্পন্ন করেন। এর পরবর্তীতে তিনি নিউরাল সায়েন্স ফিলোসফি সহ আরো নানান বিষয়ে তিনি বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ইডেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন । এ আই বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর সাথে কীভাবে নিউরাল নেটওয়ার্কের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে মেশিন লার্নিং এর মত এত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে আরো গতিশীল করে তোলা যায় তা জিওফেরি হিন্টোন করে দেখিয়েছেন।
তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও নিউরাল নেটওয়ার্ককে কীভাবে মানুষের সাহায্য ছাড়াই আরও দ্রুত শেখানো সম্ভব তা নিয়ে বিশদভাবে গবেষণা করেছেন । এছাড়াও নিউরাল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তির সাথে মস্তিষ্কে নিউরনের সংমিশন ঘটালে তা কীভাবে মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলতে পারে তা নিয়েও গবেষণা করেছেন।
আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর বিভিন্ন ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে তিনি বরাবর সোচ্চার ছিলেন । এই মেশিন লার্নিং এর সাথে নিউরাল নেটওয়ার্কের সংযোগ ঘটানোর জন্যই তিনি ২০২৪ সালে ‘জন এইচ হোপফিল্ডের’ সাথে সম্মিলিতভাবে পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়াও ইতিহাসে তিনিই প্রথম ২০০১ সালে রুবেল হার্ট পুরস্কারপ্রাপ্ত হন । তার এ আবিষ্কার মানবজাতির ইতিহাসে অন্যতম মাইল ফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।
০৭. হুজি শু
হুজি শু-ই প্রথম অটো ইমিউন রোগের জন্য যে t -cell থেরাপি দেওয়া হয় তার ফলাফল প্রকাশ করেন। অর্থাৎ তিনি ডোনারের মাধ্যমে টি সেলকে রিপ্লেস বা পুনঃস্থাপন করে সম্পূর্ণ নতুন এক উপায়ে এই থেরাপি ব্যবস্থা চালু করেন। যা চিকিৎসা বিজ্ঞানের এক অনবদ্য আবিষ্কার। তিনি অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডিতে ইমিউনোলজি ও হিউম্যাটোলজিতে তার পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন ।
এছাড়াও তিনি ২০০৮ সালে চীনের সাংহাইতে হিউম্যাটোলজির জন্য একটি ক্লিনিক্যাল গবেষণা কেন্দ্র উন্মোচন করেন। তার এ উদ্ভাবনীয় টি সেল থেরাপির জন্য তিনজন রোগী অটো ইমিউন ডিজিজ থেকে সম্পূর্ণভাবে আরোগ্য লাভ করেছিলেন। তারা এতটাই দুর্বল ছিল যে তাদের দৈনন্দিন কাজগুলো সঠিক মত করতে সক্ষম ছিল না মাত্র ছয় মাসের মধ্যেই তারা পূর্বের তুলনায় অনেকটাই সুস্থ হয়ে যায় তার।
এ আবিষ্কৃত সেলগুলোকে চিমেরিক এন্টিজেন রিসেপ্টর বা সিএআর বলা হয় । মূলত এই কোষগুলো ডিজাইনিং করা হয়েছে বি নামক এক ধরনের ইমিউন কোষ কে খুঁজে বের করে ধ্বংস করার জন্য ।এই টি সেল থেরাপি ব্লাড ক্যান্সারের চিকিৎসায় ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। বিজ্ঞানী সুয়ের ডোনার ভিত্তিক সিএআরটি সেল অটোইমিউন চিকিৎসার ব্যাপক প্রসার এবং এই চিকিৎসার খরচ অনেকাংশেই কমানো সম্ভব।
০৮. ডেভিড বেকার
ডেভিড বেকার তার প্রোটিন ডিজাইন ও প্রোটিনের থ্রিডি মডেল এর জন্য বায়োকেমিস্ট হিসাবে বিশেষভাবে পরিচিত । তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োলজিতে ব্যাচেলর সম্পন্ন করেন। এরপর তিনি ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ওয়াশিংটন স্কুল অফ মেডিসিনে বায়ো কেমিস্ট্রি বিভাগের ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসেবে তার গবেষণার অধ্যায় শুরু হয়।
ডেভিড বেকারের গ্রুপ মূলত রোসেটা নামক একটি অ্যালগরিদম তৈরি করেছে যা প্রোটিন গঠনের পূর্বাভাস দিতে পারে। মূলত তার এই অ্যালগরিদম-ই পরবর্তীতে প্রোটিন ডিজাইনের একটি টুল হিসেবে ব্যবহৃত হয় । যা পরবর্তীতে রসেটা প্রটোকলের একটি স্বয়ংক্রিয় ভার্সন তৈরি করেছে। তার এই অ্যালগরিদম এবি ইনিশিয়া প্রোটিন স্ট্রাকচার প্রেডিকশন তৈরি করেছে , এটি মূলত এমন একটি কম্পিউটেশনাল পদ্ধতি যার মাধ্যমে প্রোটিনের অ্যামিনো অ্যাসিড সিকুয়েন্স থেকে তার থ্রিডি গঠন পূর্বাভাস দিতে সক্ষম।
আর এই পদ্ধতির জন্য কোন পরিচিত প্রোটিন গঠনের টেমপ্লেটের প্রয়োজন হয় না । শুধুমাত্র সিকোয়েন্স থেকেই পূর্বাভাস দিতে সক্ষম ।আমরা জানি যে পৃথিবীতে সব প্রোটিনের গঠন এখনো জানা সম্ভব হয়নি। এই প্রোটিন স্ট্রাকচার সম্পর্কে আরো বিশদভাবে জ্ঞান লাভ করা গেলে তা জীববিজ্ঞান ও রোগ গবেষণায় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। ডেভিড বেকারের এ আবিষ্কার চিকিৎসা বিজ্ঞানের সাফল্যকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
০৯. ফেরদৌসী কাদেরী
২৫ বছরের বেশি সময় ধরে যিনি কলেরা, টাইফয়েড সহ বিভিন্ন মহামারি নিয়ে নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন ,বাংলাদেশের অন্যতম একজন ভ্যাকসিন বিজ্ঞানী ড. ফেরদৌসী কাদেরী। তিনি 1951 সালে জন্মগ্রহণ করেন ও প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়ো কেমিস্ট্রি ও মলিকিউলার বায়োলজি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন ।এরপর তিনি লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮০ সালে বায়ো কেমিস্ট্রি তে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বাংলাদেশের সোসাইটি অফ মাইক্রোবায়োলজিস্ট এর প্রতিষ্ঠাতা ও বোর্ড এডভাইসরী সদস্য। তিনি মূলত ইমিউনোলজি এবং সংক্রামক রোগের উপর বিশেষায়িত গবেষক ।
আমরা জানি যে কলেরা একটি মারাত্মক ডায়রিয়াজনিত রোগ যা সাধারণত নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে বেশি দেখা যায় । আগে দুকোরাল নামক টিকার প্রচলন থাকলেও তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় তার একটি সহজলভ্য বিকল্প হল শানচল টিকা। এই শানচোল টিকার আবিষ্কারক হলো ড. ফেরদৌসী কাদেরী।
সাধারণ মানুষের আর্থিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তার এ আবিষ্কার বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় আমল পরিবর্তন এনেছে। এছাড়াও তিনি বর্তমানে হেলিকোব্যাক্টর কলি, টাইফয়েড সহ আরো বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিনকে আরো উন্নত ও কার্যকরী করতে তার গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন ।তিনি ২০১২ সালে ক্রিটোফি মেরিয়াক্স , ২০০৫ সালে বাংলাদেশ একাডেমি অফ সায়েন্স থেকে গোল্ড মেডেল ,২০২৪ সালে ভিন ফিউচার পুরস্কার সহ আরো নানা পুরস্কারে ভূষিত হন।
১০. জন লিন ওয়াং
৬৩ বছর বয়সী জন লিন ওয়াং ন্যানো টেকনোলজিতে ও ন্যানো জেনারেটরকে এক অন্যতম উচ্চতায় নিয়ে গেছে। 1961 সালে চায়নাতে জন্মগ্রহণ করা এ চাইনিজ আমেরিকান গবেষক ১৯৮২ সালে শিডিয়ান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফলিত পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ও ১৯৮৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থবিজ্ঞানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি বেইজিং ইনস্টিটিউট অফ ন্যানো এনার্জি এবং ন্যানো সিস্টেমের প্রবর্তক ও মহাপরিচালক ।
২০০৬ সালে তিনি প্রথম পাইজো ইলেকট্রিকে ন্যানো জেনারেটর আবিষ্কার করেন যেটি জিংক অক্সাইড এর ন্যানোওয়্যার থেকে যে ক্ষুদ্র যান্ত্রিক শক্তি পাওয়া যায় তা থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। আর এ শক্তি যে শুধু জিংক অক্সাইড থেকেই পাওয়া যায় তা নয়, এটি বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক অবস্থা থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। যার ফলে নতুন ধরনের ইলেকট্রিক ,opto ইলেকট্রিক সেন্সর তৈরি করা হচ্ছে ।
এছাড়াও তিনি স্ট্রেইন গেটের ট্রানজিস্টর তৈরি করেছেন যা স্মার্ট মিমস ডিভাইস ,ন্যানো রোবটিক্স ,হিউম্যান ইলেকট্রিক ইন্টারফেস এবং উন্নত সেন্সর প্রযুক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ । ড. উয়াং এর ন্যানো জেনারেটরের ধারণাটি মূলত ম্যাক্সওয়েল ডিসপ্লেসমেন্ট কারেন্ট থেকে উদ্ভূত । ১১৫ বছর পর তিনি এই ধারণাটি পুনরায় প্রয়োগ করেছেন যা ম্যাক্সওয়েলের ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গের আবিষ্কার কে নতুনভাবে চর্চায় নিয়ে আসে ।
তিনি মাইক্রোস্কপি সোসাইটি অফ আমেরিকা থেকে 1999 সালে বুটন মেডেল পান, এছাড়াও আমেরিকান সিরামিক সোসাইটি থেকে ফোর্ডি অ্যাওয়ার্ড ,এমআরএস মেডেল ,২০১৪ সালে ওয়ার্ল্ড টেকনোলজি অ্যাওয়ার্ড ,এনার্জি ফ্রন্টিয়ারে ইএনআই অ্যাওয়ার্ড, ২০১৮ সালে এলবার্ট আইনস্টাইন ওয়ার্ল্ড অ্যাওয়ার্ড অফ সায়েন্স সহ আরো বিভিন্ন উল্লেখযোগ্য পুরস্কার লাভ করেন।
মোঃ মারুফ হাসান, আদিত্য রহমান / যৌথ প্রতিবেদক
তথ্যসূত্র: নোবেল প্রাইজ, টাইম.কম, ন্যাচার.কম